চকরিয়ায় এবার উচ্চ আদালতের ৬ মাসের স্থগিতাদেশ অমান্য করে তড়িগড়ি করে নির্ধারিত তারিখের আগে একটি গরু বাজার নিলাম দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ৪নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুর শুক্কুরের দায়ের করা একটি রিট মামলার (নং ৩৮৪৬/১৭) প্রেক্ষিতে হাইর্কোটের বিচারপতি এম.মোজাম্মেল হোসেন ও আমীর হোছাইন সম্বনয়ে গঠিত দ্বৈত বৈঞ্চ গত ২২ মার্চ শুনানী শেষে উপজেলার পশ্চিম বড়ভেওলা (ইলিশিয়া) গরু বাজারটি ইজারা প্রক্রিয়ার বিপক্ষে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে আদালত শুনানী শেষে মামলার বিবাদি ১০ জনের বিরুদ্ধে রুলনিশি জারি করেন।
বাদির পক্ষের কৌশলী হাইর্কোটের সিনিয়র আইনজীবি সুব্রত চৌধূরী জানান, বিজ্ঞ আদালত মামলায় যাদের বিরুদ্ধে রুলনিশি জারি করেছেন তাঁরা হলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রানালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রানালয়ের সচিব, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রেভিনিউ ডেপুটি কালেকক্টর (আরডিসি), উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি), জেলা পুলিশ সুপার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাকের আহমদ। তিনি জানান, আদেশে আদালত বাজারটি নিলাম দানের ক্ষেত্রে বাদি পক্ষের আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৬ মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। একই সাথে আদালত বিবাদিগনের প্রতি বাজার নিলাম কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষনা করা হবেনা তা জানতে রুলনিশি জারি করেছেন। একই সাথে ইউনিয়ন পরিষদ এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাশের জায়গায় বাজারটি নিলাম না দেয়ার জন্য বিষয়টি নিয়ে আলাদাভাবে আদালত নির্দেশও দিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে।
মামলাটির বাদি আবদুর শুক্কুর মেম্বার জানান, ২২ মার্চ আদালতের দেয়া আদেশের অনুলিপির কপি (বাদি পক্ষের আইনজীবি স্বাক্ষরিত) বৃহস্পতিবার সকালে বিবাদিগনের দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। তারমধ্যে অনুলিপির কপি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি), চকরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার ভুমি এবং প্রশাসনের অপরাপর দপ্তর গুলোতে দেয়া হয়। এসব দপ্তর থেকে অনুলিপির কপি বুঝে পাওয়ার বিষয়টিও সীল মেরে নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, অনুলিপির কপি নিয়ে গেলে সরাসরি দপ্তরে গেলেও চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা গ্রহন করেনি। ফলে ফ্যাক্সযোগে তার দপ্তরে কপি পাঠানো হয়।
মামলার বাদি আবদুস শুক্কুর দাবি করেন, আদালতের স্থগিতাদেশ সংক্রান্ত দেয়া আদেশ অমান্য করে নির্ধারিত তারিখের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩মার্চ) বিকালে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনেকটা তড়িগড়ি করে ৪১ লাখ ১০ হাজার টাকায় নিলাম দেন। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, বাজারটি নিলাম দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। তাতে তিনি দরপত্র সংগ্রহের শেষ তারিখ ২৯ মার্চ এবং দরপত্র দাখিল ও খোলার শেষ তারিখ ৩০ মার্চ নির্ধারণ করেন। অথচ তিনি আদালতের আদেশের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে নির্ধারিত তারিখের ৭ দিন আগে বাজারটি নিলাম দেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের আদেশের কোন কপি আমি পাইনি। বাজারটি নিয়মানুযায়ী নিলাম দেয়া হয়েছে, এতে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে। এখানে কোন ধরণের ব্যতয় ঘটেনি। নির্ধরিত তারিখের আগে কিভাবে বাজারটি নিলাম প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি বিজ্ঞপ্তির প্রকাশের সময় দেয়া তারিখে তথ্যগত ভুল হয়েছে। #
পাঠকের মতামত: